সচ্চিদানন্দ রায়ের অতিস্বল্প আর নাতিদীর্ঘ দৈর্ঘ্যের মোট ৭৯ টি ছড়া শৈশব, বাল্য, কৈশোর, যৌবন, তারুণ্য, প্রৌঢ়ত্ব আর বার্ধক্য, এই সাত সময়ের সাতরঙা রামধনুর কোলাজ হিসেবে ধরা দিতে চাইছে পাঠককুলের কাছে। সচ্চিদানন্দ ছড়ার মাধ্যমে পড়াশোনার পরিধির মধ্যে পরিচিত প্রবাদ প্রবচন, প্রাত্যহিক জীবনের অনুকূল ও প্রতিকূল পরিবেশ, অব্যক্ত মনের আনন্দ আর নিরানন্দকে বাঁধবার চেষ্টা করেছেন অনির্বচনীয় নস্ট্যালজিয়ায়। সচ্চিদানন্দবাবু বাক্যের বেহালায় ছড়ার ছড়িতে শব্দের সুর তুলে পাঠকের দরবারে নিজেকে নয়, স্বীয় সৃষ্টিকে উপহার দিলেন ‘ট্যারা চোখে’র কৃষ্টিতে। পাঠ্যনন্দনের সঙ্গে দৃষ্টিনন্দনের সাজুয্য রাখার তাগিদে প্রতিটি ছড়ার মধ্যে ছবির অবকাশও রাখা রয়েছে পাঠকস্বার্থে। অনেকের মনে আসা অথচ মুখে না বলে ওঠা কথা কী করে যে কালির শব্দে ভেসে উঠেছে সচ্চিদানন্দ রায়ের কলমে, পড়ার শেষে তাও ভাবতে হবে বইকী !
কবি সচ্চিদানন্দ রায়ের জন্ম ১৯৩৮ সালের ১৮ই জুন বর্ধমান জেলার মহাশয় হাউসে। পিতার নাম কালিকাদাস রায়। পূর্বপুরুষেরা অর্থাৎ নৃসিংহপ্রসাদ রায়, ব্রজকিশোর রায়, নন্দকুমার রায়, রঘুনাথ রায় প্রমুখ পুরুষানুক্রমে বর্ধমান মহারাজার দেওয়ান ছিলেন। কবি নিজে কর্মসূত্রে সিইএসসির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওনার এক পূর্বপুরুষ সাধক রঘুনাথ রায় শাক্ত পদাবলির বহু পদের রচয়িতা এমনকী বৈষ্ণব পদ রচনাকারও। কবি তথা ছড়াকার সচ্চিদানন্দ রায় সম্পর্কে পাঠকস্বার্থে ভুল ভাঙিয়ে রাখাটা জরুরি যে, তিনি গতানুগতিক কিংবা গড়পড়তা ট্যালেন্ট নন, জবরদস্ত জিনিয়াস! ‘সন্দেশ’ ও ‘আনন্দমেলায়’ ওনার বিভিন্ন লেখা প্রকাশিত হয়েছে। গণিতের শিক্ষকতা ও সাহিত্যচর্চা তাঁর অবসরের সঙ্গী। এহেন প্রচারবিমুখ মানুষটির লেখার প্রতিটি ছত্রে তার প্রমাণ মেলে। অসীম প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর না হলে পাহাড়প্রমাণ অনবদ্য ছড়া আর কবিতার মালিক হওয়া সম্ভবপর নয়। কবির অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী আজ প্রতিষ্ঠিত সমাজের বিভিন্ন শাখায়। তাঁর সুযোগ্য শিষ্যদের কাছে তিনি স্বনামধন্য ‘দাদু স্যর’!








Reviews
There are no reviews yet.